লাগামহীন খুন-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি: আতঙ্কে জনজীবন, ব্যর্থতার দায় কার?

দেশজুড়ে খুন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দিনের পর দিন সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যেই চালাচ্ছে বর্বরতা, নিরীহ মানুষ খুন হচ্ছে, চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অনেকে জীবনের ভয়েই পুলিশের কাছেও অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না।
গত ২৭ জুলাই গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদার টাকা তুলতে গিয়ে ধরা পড়েছে একদল তরুণ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সাভার, মিরসরাই, ঝিনাইদহ, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ রাস্তায় নেমে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে দেশে ৩,৮৫৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। মহানগর পুলিশ এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ঢাকায়—৪৮০টি। পুলিশের রেঞ্জের মধ্যে ঢাকা রেঞ্জে সবচেয়ে বেশি—৯০৩টি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সংখ্যা শুধু সংখ্যা নয়, এটি দেশের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির প্রতিচ্ছবি।
রাজধানীতে ঘটে যাওয়া আলোচিত কিছু হত্যাকাণ্ড যেমন মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদ, নাজমুল হাসান পাপ্পু ও তার স্ত্রী দোলনা, ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন এবং বিএনপি নেতা কামরুল আহসান সাধনের হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ শোকে ও ক্ষোভে স্তব্ধ।
চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শিক্ষক, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, পরিবহন শ্রমিক, ব্যবসায়ী সবাই রাজপথে। মানববন্ধন হয়েছে মোহাম্মদপুর, সাভার, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ নানা স্থানে।
পুলিশ বলছে, তারা তৎপর। সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা পুনরায় জানানো হচ্ছে। তবে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এখনই দৃশ্যমান অভিযান ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই লাগামহীন সন্ত্রাস এবং চাঁদাবাজি পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই বিপর্যস্ত করে তুলবে।