বুধবার , ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Wednesday , 03 September 2025
০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

অশ্রু চৌধুরী, পরশুরাম

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ১৯ জুলাই ২০২৫

জুলাই বিপ্লবে ফেনীর প্রথম শহীদ ইকরাম হোসেন কাউসার

জুলাই বিপ্লবে ফেনীর প্রথম শহীদ ইকরাম হোসেন কাউসার

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ও ন্যায়ের দাবিতে জীবন দিয়েছেন এক তরুণ মেধাবী ছাত্র-ইকরাম হোসেন কাউসার। ২৪ জুলাই বিপ্লবকে কেন্দ্র করে ১৯ জুলাই ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন তিনি। ইকরাম ছিলেন ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার রাজেষপুর গ্রামের সন্তান।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন তিনি। পড়াশোনায় যেমন ছিলেন মেধাবী, তেমনি ছিলেন সাহসী, সচেতন এবং সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভাবতেন।

ইকরামের বাবা মাওলানা আনোয়ার হোসেন রাজেষপুর গ্রামের এক সম্মানিত ধর্মীয় শিক্ষক। সন্তানের অকাল মৃত্যুতে শোকাহত এই পরিবার এখন শুধু একটিই প্রশ্ন করছে- আমার সন্তান কী অপরাধ করেছিল?

বন্ধুদের ভাষ্যে, ইকরাম সবসময় সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন। অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন। ২৪ জুলাই বিপ্লবের ডাক এলে, তিনিও অংশ নেন ঢাকার বিক্ষোভে। কিন্তু ১৯ জুলাই রাজধানীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।

তাঁর সহপাঠীরা জানায়, ইকরাম ছিলেন শান্ত, ভদ্র, এবং চরম সহানুভূতিশীল একজন মানুষ। তার কোনো রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় ছিল না, ছিল না কোনো সন্ত্রাসী অতীত। শুধু দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামা ছিল তার ‘অপরাধ’।

ইকরামের মৃত্যু সংবাদে ফেনীজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরশুরাম উপজেলার রাজেষপুরে তার বাড়িতে চলছে শোকাবহ পরিবেশ। গ্রামের মানুষ, সহপাঠী, শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা সবাই তার মরদেহ একনজর দেখতে ভিড় করেন।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক সমাজ ও ছাত্র সংগঠনগুলো ইকরামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা শহীদ ইকরামের যথাযথ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেছেন।
ইকরাম হোসেন কাউসার এখন কেবল একটি নাম নয়, তিনি ২৪ জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিচ্ছেন। নিরপরাধ এই প্রাণটি কেড়ে নেওয়ার দায় কার? পরিবার, বন্ধু, দেশবাসী এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়