আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, মূল এজেন্ডা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য আলাস্কায় বৈঠকে বসছেন। দুই নেতা ভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে এলেও মূল আলোচ্য বিষয় হবে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, পুতিন দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের দখলকৃত এলাকা ধরে রাখার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প নিজেকে বৈশ্বিক শান্তিদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। বৈঠকে পুতিনের জন্য কূটনৈতিক পুনর্বাসন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির সুযোগ রয়েছে, আর ট্রাম্পের উদ্দেশ্য এখনো অস্পষ্ট হলেও তিনি শান্তি প্রক্রিয়ায় কৃতিত্ব নিতে চান।
ক্রেমলিনের জন্য বৈঠক আয়োজন ও যৌথ সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা একটি বার্তা- পশ্চিমা বিশ্বের বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আলাস্কা বেছে নেওয়ার পেছনে নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক কৌশলগত কারণ ছাড়াও রয়েছে ঐতিহাসিক প্রতীক, কারণ ঊনবিংশ শতকে জারশাসিত রাশিয়া এই অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করেছিল।
পুতিনের মূল শর্ত হলো- চারটি দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল (দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন) সম্পূর্ণ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা এবং কিয়েভের অবশিষ্ট অংশ থেকেও সরে যাওয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ করতে পারবেন। ক্ষমতায় ফেরার পর তিনি কখনো ইউক্রেন, কখনো রাশিয়ার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ল্যান্ড-সোয়াপিং বা শান্তির বিনিময়ে ভূখণ্ড ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কিয়েভের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতারা বৈঠকের আগে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যাতে তিনি কিয়েভের জন্য অগ্রহণযোগ্য কোনো চুক্তি না করেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, যদি বৈঠক শেষে ট্রাম্প শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির দাবি করার সুযোগ পান, তিনি তা নেবেন- আর পুতিন হয়তো তা হতে দেবেন, তবে রাশিয়ার শর্তে।