বাংলাদেশে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য

গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবারও পুরোনো সংকট ফিরে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া (CNA)- কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
ইউনূস জানান, সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেগুলোর প্রায় সবই পূরণের পথে রয়েছে। তবে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগের কারণে বড় ধরনের সংস্কার অপরিহার্য। তার ভাষায়, "নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা।"
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা গত আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করলেও দিল্লি সাড়া দেয়নি। ইউনূস বলেন, ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যেন হাসিনা বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান।
শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ঢাকার আঞ্চলিক কূটনীতিতে পরিবর্তন এসেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। মার্চে বেইজিং সফরে গিয়ে ইউনূস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে যেমন ভালো সম্পর্ক আছে, ভারতের সঙ্গেও তেমন সম্পর্ক চাওয়া হচ্ছে-এটা শুধু চীনের জন্য নয়, যে কোনো দেশের জন্যই উন্মুক্ত।
৮৫ বছর বয়সী ইউনূস জানান, প্রথমে দায়িত্ব নিতে চাননি, তবে ছাত্রনেতাদের অনুরোধ ও জনগণের ত্যাগ তাকে রাজি করিয়েছে। নির্বাচন শেষে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না এবং যুবসমাজ ভোটের মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা প্রকাশ করবে।