মালয়েশিয়ায় প্রবেশে ঘুষ, কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ৩০
মালয়েশিয়ায় ঘুষের বিনিময়ে প্রবাসীদের প্রবেশে সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অফিসারসহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। ‘অপারেশন রেন্টাস’ নামে সংস্থাটির বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৮ জন এনফোর্সমেন্ট অফিসার, ৫ জন কোম্পানির মালিক এবং তিনজন সাধারণ নাগরিক। গ্রেফতারকৃত কর্মকর্তাদের বয়স ২৩ থেকে ৫৪ বছর, যারা মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা সংস্থা (একেপিএস) ওয়ান থেকে একেপিএস নাইন পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রেডে কর্মরত ছিলেন।
অভিযানে ৫৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (৪৮টি ব্যক্তিগত ও ৯টি কোম্পানির) জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর মোট মূল্য ২.৭ মিলিয়ন রিঙ্গিতেরও বেশি। এছাড়া নগদ ২ লাখ রিঙ্গিত, বিলাসবহুল গাড়ি, মোটরসাইকেল, সোনার বার, স্বর্ণালঙ্কার, ঘড়ি, হ্যান্ডব্যাগ ও টেলিযোগাযোগ ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএসিসি’র প্রধান কমিশনার তান শ্রী আজম বাকি জানান, একেপিএস এবং ইমিগ্রেশন বিভাগের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা প্রতি মাসে ৫০ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে প্রবাসীদের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই দেশে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে। যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
তিনি আরও জানান, জড়িত কর্মকর্তারা সফলভাবে প্রবাসীদের থেকে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত ঘুষ নিয়েছেন। এ অর্থ নগদে বা এসক্রো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে। একেকজন কর্মকর্তা মাসে গড়ে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার রিঙ্গিত ঘুষ গ্রহণ করেছেন।
আজম বাকি বলেন, বিদেশি নাগরিকদের পাসপোর্ট নম্বর, ফ্লাইট টিকিটসহ সব তথ্য এজেন্টরা কর্মকর্তাদের সরবরাহ করত। এরপর কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট ইমিগ্রেশন কাউন্টার চিহ্নিত করে দিতেন। সংশ্লিষ্ট কাউন্টারের কর্মকর্তা কোনো ধরনের বিস্তারিত যাচাই ছাড়াই ওই বিদেশিদের প্রবেশের অনুমতি দিতেন।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের সাবেক আইন উপদেষ্টা দাতুক সেলভরাজ বলেন, এই ধরনের দুর্নীতি সীমান্ত সুরক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে ভঙ্গুর করে দেয়। এটি শুধু অপরাধীদের নয়, সন্ত্রাসীদেরও প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। এমন অপরাধের শাস্তি যদি দ্রুত এবং দৃষ্টান্তমূলক না হয়, তবে অন্য কর্মকর্তারাও একই পথে হাঁটবে। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ দেওয়া যাবে না।





































