তিস্তার পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে, চার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি

উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার রাত থেকে অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সোমবার ভোরে পানি কিছুটা কমলেও তা এখনো বিপৎসীমার ওপরেই রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। গতকাল রাতে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠায় তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়।
রাতে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ফসলি জমি, আমন ধান ও সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে দেড় শতাধিক চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ব্যারেজ রক্ষায় সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং চলছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘ব্যারেজে পানি কিছুটা কমলেও ভাটির দিকে পানি বাড়ছে।’
স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন, ঘরে কোমরসমান পানি ওঠায় তারা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে গবাদিপশু ও আসবাব নিয়ে বাঁধে অবস্থান করছেন।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সবজি খেতে বড় ক্ষতি হতে পারে, তবে কয়েক দিন পানি থাকলেও আমন ধানের ক্ষতি তুলনামূলক কম হবে।’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পানিবন্দিদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’