আরব বিশ্বের ‘ন্যাটো’ গড়ে তুলতে তোড়জোড়

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে আরব বিশ্বের যৌথ সামরিক বাহিনী গঠনের উদ্যোগ। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মতো কাঠামোয় একটি প্রতিরক্ষামূলক ছাতার নিচে সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছে মিসর। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা ও দোহায় আজ অনুষ্ঠেয় আরব-ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরেই এই আলোচনা জোরালো হয়েছে।
আরবি গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, কায়রোর নেতৃত্বেই এই পরিকল্পনা এগোচ্ছে। লেবাননের দৈনিক আল-আখবার জানিয়েছে, মিসর এমন একটি বাহিনী চায়, যা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হবে এবং কোনো আরব রাষ্ট্র আক্রান্ত হলে সেখানে মোতায়েন করা যাবে। লন্ডনভিত্তিক আল-কুদস আল-আরাবির দাবি, প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এ বাহিনী গঠনকে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষামূলক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি উসকানি নয়।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম মা’আন জানিয়েছে, মিসর প্রায় ২০ হাজার সেনা দেওয়ার কথা ভাবছে। বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডারের পদেও মিসরের একজন চার তারকা জেনারেল বসানো হতে পারে। সৌদি আরব এতে প্রধান অংশীদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মরক্কো ও আলজেরিয়ার সেনাও এই উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
কমান্ড কাঠামো নিয়েও আলোচনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, শীর্ষ নেতৃত্ব থাকবে মিসরের হাতে। দ্বিতীয় অবস্থান পেতে পারে সৌদি আরব বা অন্য কোনো উপসাগরীয় দেশ। এতে কায়রো নেতৃত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলোও গুরুত্ব পাবে।
প্রায় এক দশক আগে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু কাতারে হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর আবারও বিষয়টি সামনে এসেছে। মিসর এবার আরব দেশগুলোর সমর্থন আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে।
যদিও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে এই আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, আরব নিরাপত্তা কাঠামোর কেন্দ্রে নিজেদের স্থাপন করতে চাইছে মিসর। অন্যদিকে ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ায়ির লাপিদ এক্সে লিখেছেন, যৌথ আরব বাহিনী গঠনের উদ্যোগ শান্তি চুক্তিগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।