চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন মারা গেছেন! সত্যি নাকি গুজব?

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রখ্যাত অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে সম্প্রতি একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, তিনি নাকি মারা গেছেন! খবরটি অনেককে নাড়া দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে, এটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও মনগড়া তথ্য।
চলমান এই গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ছেলে মিরাজুল মইন জয় এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাবা বর্তমানে অসুস্থ, তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার চিকিৎসা নিয়মিত চলছে। দয়া করে কেউ কোনো গুজবে কান দেবেন না।”
তিনি আরও জানান, বাবার অসুস্থতার খবরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ও প্রবাসে নিসচার সদস্য, ভক্ত-অনুরাগী এবং সাধারণ মানুষ আন্তরিকভাবে দোয়া করছেন। এমনকি জুমার নামাজে তার সুস্থতা কামনায় বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিলও আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এসব মানবিক সাড়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জয়।
তবে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে তার ভক্ত-অনুরাগীরা। কারণ, কিছু ইউটিউবার ও ফেসবুক ব্যবহারকারী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন জয়। “মাত্র কয়েকটা ভিউয়ের আশায় অনেকে বিভ্রান্তিকর ভিডিও ছড়াচ্ছে, যা বাবার ভক্তদের মনে আঘাত দিচ্ছে,”—বলেন তিনি। একই সঙ্গে এসব কাজের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
যারা ইলিয়াস কাঞ্চনের স্বাস্থ্য নিয়ে নিশ্চিত তথ্য জানতে চান, তাদের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে ইলিয়াস কাঞ্চন চিকিৎসাধীন রয়েছেন লন্ডনের হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে। গত আগস্টে তার মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ায় অস্ত্রোপচার করা হয় উইলিংটন হাসপাতালে। অপারেশনে টিউমারের একটি অংশ অপসারণ করা হলেও, ঝুঁকির কারণে সম্পূর্ণটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এখন তিনি নিয়মিত রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি ‘টার্গেট থেরাপি’ নিচ্ছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এই থেরাপি সপ্তাহে পাঁচ দিন করে ছয় সপ্তাহ চলবে এবং এরপর তাকে চার সপ্তাহ চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যু নিয়ে যা ছড়ানো হয়েছে, তা নিছকই গুজব। তিনি জীবিত, তবে চিকিৎসাধীন। তার সুস্থতা কামনায় দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন তার পরিবার। সঠিক তথ্য না জেনে বিভ্রান্তিকর কোনো খবর না ছড়ানোই এখন সকলের দায়িত্ব।