যে ফোনালাপ পাল্টে দিলো বৈশ্বিক রাজনীতির প্রেক্ষাপট

পৃথিবী মাঝে মাঝে এমন মুহূর্তের সাক্ষী হয়, যা ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেয়। গত ৩০ আগস্টের এক ফোনালাপ হয়তো তেমনই এক ঘটনা—যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মঞ্চে নতুন অঙ্ক কষে দিয়েছে। ফোনালাপটি হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে। আর সেই কথোপকথনই তৈরি করেছে নতুন বিশ্ব-রাজনীতির সমীকরণ।
প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন—ভারত-পাকিস্তানের সামরিক সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব তারই। এমনকি পাকিস্তান তাকে নোবেলের জন্য মনোনয়ন দেবে বলেও জানান তিনি। ট্রাম্প আশা করেছিলেন, মোদিও একই প্রশংসা করবেন। কিন্তু মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দেন—যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। এই অবস্থান ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করে, আর সেখান থেকেই শুরু হয় দুই নেতার সম্পর্কে শীতলতা।
ঘনিষ্ঠ বন্ধু থেকে পরিণত শত্রুতে রূপ নেওয়া এই সম্পর্কের প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যেও। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। তবুও এখানেই শেষ হয়নি গল্প। বরং এই ভাঙনের সুযোগে মোদি তাকিয়েছেন বেইজিংয়ের দিকে। চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মেলনে ভারত-চীন নেতাদের করমর্দন বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলো—নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার ছক কষা শুরু হয়ে গেছে। এর সঙ্গে যোগ দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ স্থায়ী হয়েছিল প্রায় ৩৫ মিনিট। এরপর ট্রাম্প একাধিকবার মোদির সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও সাড়া মেলেনি। অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস অবশ্য এসব দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে।
তবে দৃশ্যপট পরিষ্কার—ভারত, চীন ও রাশিয়ার সম্ভাব্য ঐক্য বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ‘ড্রাগন-হাতি’র এই করমর্দন বিশ্ব মানচিত্রে কতদূর পরিবর্তন আনে।