পোড়া ছয় দেহের পরিচয় মিলবে দাঁতের ডিএনএ-তে!

একজন বাবা বারবার হাসপাতালের মর্গে ছুটে যাচ্ছেন—শুধু সন্তানের মুখটা একবার দেখার আশায়। কিন্তু যা পড়ে আছে, তা মানুষ বলার উপায় নেই। আগুনে পুড়ে যাওয়া ছয়টি মরদেহ এখনো পড়ে আছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এর হিমঘরে—যাদের পরিচয় অজানা।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যেসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলো এতটাই দগ্ধ যে চেহারা, আঙুল বা পোশাক—কোনো কিছুই শনাক্তযোগ্য নয়। শেষ আশ্রয় এখন দাঁত। চিকিৎসকরা বলছেন, দাঁতের বাইরের শক্ত স্তর এনামেল অগ্নিতে সহজে নষ্ট হয় না, ফলে ভেতরের পাল্প টিস্যুতে সংরক্ষিত কোষ থেকেই মিলবে পরিচয়ের সূত্র।
যেসব দেহের দাঁতও নষ্ট হয়ে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে হাড়ের ভেতর থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে নিহতদের সম্ভাব্য স্বজনদের কাছ থেকে চুলের গোড়া, নখ বা গালের কোষের নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।
সিআইডির ফরেনসিক ইউনিট জানিয়েছে, ১১টি মরদেহের অংশ ও সমসংখ্যক স্বজনের নমুনা পরীক্ষাধীন। শিগগিরই ম্যাচিং করে শনাক্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক চিকিৎসকরা বলছেন, অগ্নিদগ্ধ মরদেহ শনাক্তে ডিএনএ টেস্টই এখন একমাত্র নির্ভরযোগ্য পথ। যদিও এতে সময় লাগে ৭–১০ দিন, তবে ফলাফল শতভাগ নির্ভরযোগ্য।
এদিকে, নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা, নাম ও ঠিকানা নির্ধারণে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। আইন উপদেষ্টার নির্দেশে স্কুলে স্থাপন করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ, যাতে নিহত-আহতের সংখ্যা ও পরিচয় প্রকাশে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।