শেবাচিম হাসপাতালে অভিযুক্তকে দিয়েই তদন্ত কমিটি গঠনের অভিযোগ

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ওয়ার্ড মাস্টারকেই তদন্ত কমিটির সদস্য করায় তীব্র সমালোচনা উঠেছে।
১৪ আগস্ট দুপুরে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই হামলার নেতৃত্ব দেন ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল, তার সহযোগী ফেরদৌস এবং ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক নেতা।
কিন্তু হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠার পরপরই ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বাদী হয়ে আন্দোলনের সংগঠক মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই কমিটির চতুর্থ সদস্য করা হয় জুয়েল চন্দ্র শীলকে, যিনি নিজেই মামলার বাদী এবং হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওয়ার্ড মাস্টার ফেরদৌস হামলার আগে থেকেই স্টাফদের মধ্যে লাঠিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিলেন। এছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাইফুল ইসলাম পারভেজ, আল মামুন রাব্বি ও ফয়সাল রাব্বী হামলার সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
এই পরিস্থিতিকে "প্রহসন" আখ্যা দিয়ে অ্যাডভোকেট আবু-আল-রায়হান বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তদন্ত কমিটিতে রাখা আইনের লঙ্ঘন। এটি আসলে অভিযুক্তদের বাঁচানোর একটি কৌশল।”
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, “তদন্ত কমিটি সর্বদা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়। মামলার বাদী বা অভিযুক্ত কখনোই তদন্তকারী হতে পারেন না।”
তবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, কমিটির সভাপতি উপ-পরিচালক হওয়ায় প্রয়োজনে সদস্য পরিবর্তন করা সম্ভব। তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটি যদি অভিযুক্তের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়, তবে সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন:
উপ-পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান (সভাপতি)
ডা. মো. ইখতিয়ার আহসান
উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক মোসাম্মৎ শাহনাজ পারভীন
প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল জলিল মিয়া
কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।