হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি, ভাঙনে ঝুঁকিতে সেতু–সড়ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে তিস্তার বুক যেন ফুঁসে উঠেছে। ক্ষিপ্ত স্রোতের ধাক্কায় কেঁপে উঠছে তীরবর্তী বাঁধ, আতঙ্কে দিন কাটছে হাজারো মানুষের। রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুরে তিস্তার দ্বিতীয় সড়ক সেতুর পশ্চিম তীরের সেতু রক্ষা বাঁধের বড় অংশ ধসে পড়েছে; সৃষ্ট গর্তের গভীরতা প্রায় ৭০ ফুট। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পুরো বাঁধ ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
এদিকে, পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের বহু ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘন্টা, মর্ণেয়া, বালাপাড়া, টেপামধুপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের অনেক মানুষ ইতিমধ্যেই উঁচু স্থানে বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
শুধু পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব গ্রামেই সাম্প্রতিক ভাঙনে অন্তত ৫০টি বসতবাড়ি, একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ পরিবারকে মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এক বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
গঙ্গাচড়ার ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা জানিয়েছেন, প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, সাময়িক সাহায্য জরুরি হলেও স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধ ছাড়া প্রতিবছর একই ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বুধ ও বৃহস্পতিবার তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার তীরবর্তী এলাকায় বন্যার ঝুঁকি থাকবে। পানিসম্পদ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ে মঙ্গলবার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, পাশাপাশি ভারতের উজানে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে।