বৃহস্পতিবার , ১৬ অক্টোবর ২০২৫
Thursday , 16 October 2025
২২ রবিউস সানি ১৪৪৭

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ৬ অক্টোবর ২০২৫

ভারতে কেন বিজেপির তোপের মুখে জয়া আহসান?

ভারতে কেন বিজেপির তোপের মুখে জয়া আহসান?

দুই বাংলার জনপ্রিয় ও দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে চরম বিতর্কের মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশি এই অভিনেত্রীকে দুর্গাপূজার একটি কার্নিভ্যালে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি।

ঘটনাটি ঘটে গত ৫ অক্টোবর, পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে। রাজ্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত দুর্গাপূজা কার্নিভ্যালের চতুর্থ বর্ষে মূল আকর্ষণ ছিলেন জয়া আহসান। তিনি মঞ্চে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন এবং দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন। সব কিছুই চলছিল শান্ত পরিবেশে। কিন্তু জয়ার অনুষ্ঠান শেষে, তিনি মঞ্চ ত্যাগ করার পরপরই বিজেপি সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

বিজেপির অভিযোগ—বাংলাদেশি নাগরিককে দুর্গাপূজার মতো ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক আয়োজনে আমন্ত্রণ জানানো ‘দেবী দুর্গার অপমানের’ সামিল। তাদের ভাষ্যমতে, পশ্চিমবঙ্গের এত নিজস্ব শিল্পী থাকতে একজন বিদেশিকে এনে স্থানীয় সংস্কৃতিকে ছোট করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, “এটি শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীন নয়, বরং ভারতের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের জন্য হুমকি।”

তবে স্বস্তির বিষয় হলো, এই প্রতিবাদ-মানববন্ধনের সময় জয়া আহসান আর মঞ্চে ছিলেন না। তিনি অনুষ্ঠান শেষে আগেই স্থান ত্যাগ করেছিলেন। ফলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি তাঁকে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও, কোনো বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। তবুও এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

জয়া আহসান এপার-ওপার দুই বাংলাতেই দীর্ঘদিন ধরে তার অভিনয় প্রতিভা ও মার্জিত ব্যক্তিত্বের জন্য সমাদৃত। বাংলাদেশের পাশাপাশি তিনি টালিউডেও একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁকে নিয়ে এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। সংস্কৃতি জগতে অনেকে মনে করছেন, শিল্পীর কোনো ভৌগোলিক সীমা থাকে না—তাঁর কাজই তার পরিচয়। আর এমন উৎসবে জয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিকমানের শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানানো কোনোভাবেই অস্বাভাবিক নয়।

এ বিষয়ে জয়া আহসান ব্যক্তিগতভাবে কোনো বিবৃতি না দিলেও, এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে—দুই বাংলার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন অনেকের গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায় মাঝেমধ্যে। তবুও দর্শকদের ভালোবাসা আর গ্রহণযোগ্যতা তাঁকে ঠিকই এগিয়ে নিচ্ছে আপন গতিতে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়