গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ড: সিসিটিভিতে ধরা পড়ল শেষ মুহূর্তের দৃশ্য

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যার আগ মুহূর্তের দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছে, আর তুহিন পেছন থেকে মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধারণ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিও করায় দুর্বৃত্তরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
নিহত তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় শাপলা ম্যানশনের সামনে কালো পোশাক পরা এক নারী হাঁটছিলেন। হঠাৎ নীল শার্ট পরা এক ব্যক্তি তাকে টেনে ধরে পথ রোধ করেন এবং হাতাহাতির এক পর্যায়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। এ সময় কয়েকজন যুবক রামদা ও চাইনিজ কুড়াল হাতে এসে ওই ব্যক্তিকে কোপানোর চেষ্টা করে।
ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে গেলে তুহিন সেই ঘটনা ভিডিও করতে থাকেন। তার সহকর্মী সাংবাদিক মো. শামীম হোসেন জানান, তুহিন মোবাইল হাতে দুর্বৃত্তদের পেছনে দৌড় দেন। পরে তিনি চান্দনা চৌরাস্তার ঈদগা মার্কেটের পূর্ব পাশে একটি দোকানে ঢুকে আশ্রয় নেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা দোকানে ঢুকেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
নারীর সঙ্গে যার ঝামেলা হয়েছিল, সেই ব্যক্তি বাদশা মিয়া আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি জানান, ওই নারীসহ একটি চক্র তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগরীর বাসন, ভোগরা ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সক্রিয় একটি ছিনতাইকারী দল এই হামলার সঙ্গে জড়িত। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যাওয়া নারীও ওই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে মিজান ওরফে কেটু মিজান, শাহ জামাল, বুলেট এবং সুজন নামে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল হাসান জানান, নিহত তুহিনের ঘটনার পরপরই একাধিক পুলিশ টিম অভিযান শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাদশা মিয়ার সঙ্গে ছিনতাইকারীদের বিরোধ থেকেই এই হামলা ঘটে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।
বর্তমানে বাদশা মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, পুরো চক্রটিকে ধরতে শিগগিরই অভিযান জোরদার করা হবে।