৫ আগস্টের পর রিকশাচালকের ছেলে রিয়াদ ‘আলাদিনের চেরাগ’ পান
একসময় ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার ক্যাডার। পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। কিন্তু সময় বদলেছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। আচমকাই উত্থান ঘটে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল রাজ্জাক সোলায়মান রিয়াদের। গায়ে উঠে বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক, গ্রামের বাড়িতে নির্মাণ করেন দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়ি, ঈদে কোরবানির পশু কেনেন লাখ টাকায়—সব মিলিয়ে যেন ‘আলাদিনের চেরাগ’ পেয়ে রাতারাতি ভাগ্য ফেরান তিনি।
তবে এই উত্থানের পেছনে রয়েছে বিতর্কিত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। রিয়াদ বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে রয়েছেন গুলশান থানার হেফাজতে। অভিযোগ—নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে সাবেক নারী সংসদ সদস্য শাম্মি আহম্মেদের বাসায় চাঁদা দাবি করেছেন। গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের ওই বাড়িতে রোববার রিয়াদ ও তার সহযোগী কাজী গৌরব অপু উপস্থিত হন এবং দাবি করেন ৪০ লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে তাকে ‘পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া’ হবে।
ঘটনার সময় এমপি শাম্মি আহম্মেদ গুলশান থানায় খবর দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রিয়াদসহ আরও চারজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত গৌরব অপু দৌড়ে পালিয়ে যায়।
রিয়াদের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু বসুরহাট পৌরসভার পলাতক মেয়র কাদের মির্জার ক্যাডার হিসেবে। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ছিল তার রাজনৈতিক আনাগোনা। বাবা ছিলেন দিনমজুর এবং রিকশাচালক। বাড়ির অবস্থা ছিল ভগ্নপ্রায় টিনশেড ঘর। তবে গত আড়াই মাসে পুরোনো বাড়ি ভেঙে নির্মাণ শুরু করেন পাকা ভবনের। তার পরিবারের আয়-উপার্জনের কোনো নির্দিষ্ট উৎস না থাকলেও এলাকায় তিনি বিত্তবান ও প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
রিয়াদ নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্রপ্রতিনিধি বলে দাবি করলেও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, রিয়াদের এই আকস্মিক পরিবর্তন অনেক দিন ধরেই সন্দেহের উদ্রেক করছিল।
রিয়াদের চাচা জসিম উদ্দিন বলেন, “তার বাবা রিকশা চালাতেন। এখন আর পারেন না। বড় ভাই এখনো রিকশা চালান ও খেতখামারে কাজ করেন। অথচ রিয়াদ হঠাৎ করে পাকা বাড়ি করছে, দামি কাপড় পরছে—এসব আমরা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারছি না।”





































