দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিতে ফাইজারের কোভিড টিকা?

ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকা চোখের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে কর্নিয়া—চোখের স্বচ্ছ সামনের অংশ—এর গঠন ও কার্যকারিতায় পরিবর্তন আনতে পারে এই টিকা। নতুন এক গবেষণায় উঠে আসা এই তথ্য নিয়ে শুক্রবার (১৮ জুলাই) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
তুরস্কের একদল গবেষক ৬৪ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর গবেষণাটি চালান। তারা প্রত্যেকের চোখের কর্নিয়ার অভ্যন্তরীণ স্তর—যাকে এন্ডোথেলিয়াম বলা হয়—পরীক্ষা করেন টিকা নেওয়ার আগে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দুই মাস পরে। গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা নেওয়ার পর কর্নিয়া সামান্য পুরু হয়ে গেছে, এন্ডোথেলিয়াল কোষের সংখ্যা কমেছে এবং কোষগুলোর গঠনে অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে—যা চোখের কোষে চাপ বা প্রদাহের লক্ষণ।
গড়ে কর্নিয়ার পুরুত্ব ৫২৮ মাইক্রোমিটার থেকে বেড়ে ৫৪২ মাইক্রোমিটারে পৌঁছায় (প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি)। পাশাপাশি, এন্ডোথেলিয়াল কোষের সংখ্যা গড়ে ২,৫৯৭ থেকে নেমে এসেছে ২,৩৭৮ প্রতি বর্গমিলিমিটারে, যা প্রায় ৮ শতাংশ হ্রাস। যদিও এটি এখনো নিরাপদ সীমার মধ্যে, তবে যাদের চোখে আগে থেকেই জটিলতা রয়েছে—যেমন অস্ত্রোপচার, কর্নিয়া প্রতিস্থাপন বা জেনেটিক দুর্বলতা—তাদের জন্য এটি উদ্বেগজনক।
এছাড়াও কোষের গঠনের বৈচিত্র্যও বেড়েছে। সাধারণত এই কোষগুলো ছয়কোনা হয়ে ঘনভাবে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা নেওয়ার পর এই হেক্সাগোনাল কোষের অনুপাত ৫০% থেকে কমে ৪৮%-এ নেমে এসেছে। কোষের আকারের পার্থক্যের সূচক ‘ভ্যারিয়েশন কোইফিসিয়েন্ট’ ৩৯ থেকে বেড়ে ৪২ হয়েছে—যা কোষের অস্বাভাবিকতা নির্দেশ করে।
গবেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো দৃষ্টিশক্তিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও এখনই বড় কোনো সমস্যা দেখা যায়নি, তবে ভবিষ্যতে ঝুঁকি নিরসনে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে টিকা নেওয়া বন্ধ করার সুপারিশ এখনই করছেন না তারা, বরং চোখে আগেই সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য কর্নিয়ার অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।