গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছুঁই ছুঁই

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৪৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৪ জন ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত একদিনে আরও ৭ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। এর ফলে গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও দুর্ভিক্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬২ হাজারে। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৬ জন।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে নতুন করে ৪৭টি মরদেহ আনা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তবে অনেক মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে, উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, শুধু মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত ১৪ হাজার ৪২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এদিকে চলমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে প্রাণ হারানো ৭ জনের মধ্যে ২ শিশু ছিল। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত অনাহার-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৮ জনে, এর মধ্যে ১১০ শিশু।
গাজার কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল গত মার্চ থেকে সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ায় দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জন্য খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। একই মাসে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পূর্ণাঙ্গ হামলা শুরু করে। এরপর থেকে আরও ১০ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৪৪ হাজার আহত হয়েছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে মামলাও চলছে।