বেআইনিভাবে শত শত মুসলিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত

ঘর-বাড়ি, পরিচয়পত্র—সবকিছু থাকার পরও একদিন হঠাৎ জানিয়ে দেওয়া হলো, ‘তুমি ভারতের নাগরিক নও।’ এরপর চোখ বেঁধে, গায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঠেলে দেওয়া হলো সীমান্তের ওপারে। এমন শত শত ঘটনার অভিযোগ তুলে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, ভারতের বিজেপি সরকার বেআইনিভাবে জাতিগত বাঙালি মুসলিমদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক এই সংস্থা বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, এসব মানুষকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাবি করে ন্যূনতম আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। অনেকেই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
সংস্থাটির এশিয়া পরিচালক এলেইন পিয়ারসন বলেন, “সরকার যেভাবে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর কথা বলছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়—কারণ এতে মানবাধিকার, আইনগত অধিকার ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে।”
এইচআরডব্লিউ জানায়, জুন মাসে তারা ৯টি ঘটনার ভুক্তভোগী ও স্বজনদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ পরে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে পুনরায় ভারতে ফিরে আসেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, গত ৭ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫০০ জন পুরুষ, নারী ও শিশু—তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন রোহিঙ্গা—বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত।
বিশেষ করে আসাম, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্র রাজ্যে বাঙালি মুসলিমদের আটক করে বিএসএফ-এর মাধ্যমে সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, ধমক, মারধর ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়েই তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ এই ঘটনাকে বলেছেন, “নন-রিফাউলমেন্ট নীতির সরাসরি লঙ্ঘন।” বাংলাদেশ সরকার বলেছে, এই পুশ-ইন নীতির মাধ্যমে ফেরত পাঠানো গ্রহণযোগ্য নয়।