নাটকীয় টাইব্রেকারে ইউরোপ সেরা ইংল্যান্ড, স্পেনের স্বপ্নভঙ্গ

স্পেনের আধিপত্য, দারুণ গোল, আর তারপর ইংল্যান্ডের প্রত্যাবর্তন; সব মিলিয়ে উইমেন’স ইউরো ২০২৫-এর ফাইনাল ছিল এক উত্তেজনার নাট্যমঞ্চ। ম্যাচে দারুণভাবে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে ইংল্যান্ড, যারা টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আবারও ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের মুকুট অক্ষুণ্ণ রাখল।
রোববার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাতে ঐতিহাসিক এই লড়াইয়ে শুরু থেকেই স্পেন ছিল আগ্রাসী মেজাজে। বল দখল, আক্রমণ—সব ক্ষেত্রেই তারা ছিল এগিয়ে। ম্যাচের ২৫তম মিনিটেই মারিওনা কালদেন্তের দুর্দান্ত হেডে স্পেন ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু ইংল্যান্ড হার মানার দল নয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বদলি হিসেবে নামা ক্লোয়ি কেলির দুর্দান্ত ক্রসে অ্যালেসিয়া রুশোর হেড ইংলিশ শিবিরে ফেরায় প্রাণ, ৫৭তম মিনিটে আসে সমতা।
পুরো ম্যাচে স্পেন বল দখলে রেখেছিল প্রায় ৬৫ শতাংশ সময়। গোলমুখে শটও নিয়েছিল ২২টি। তবে সেসব প্রচেষ্টা ধাক্কা খায় ইংলিশ রক্ষণ আর গোলরক্ষক হানাহ হ্যাম্পটনের সাহসী পারফরম্যান্সে। ইংল্যান্ডও ৮টি শটের মধ্যে ৫টি লক্ষ্যে রাখে, যেগুলোর বেশ কয়েকটি ছিল বিপজ্জনক।
নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও গোল না আসায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই শুরু হয় নাটক। ইংল্যান্ডের প্রথম শটেই বেথ মিড পা পিছলে ‘ডাবল টাচ’ করায় শট বাতিল হয়। কিন্তু চাপ সামলে পরের তিনটি শট জালে পাঠিয়ে ম্যাচে ফিরে আসে তারা।
স্পেনের ভাগ্য অবশ্য ততটা সহায় ছিল না। তাদের তিনটি শটই ব্যর্থ হয়—দুটি ঠেকান হানাহ হ্যাম্পটন, যার মধ্যে ছিল বার্সা তারকা আইতানা বনমাতির গুরুত্বপূর্ণ শটটি। একমাত্র সফল স্প্যানিশ শটও ম্যাচে ফল বদলাতে পারেনি।
এই জয়ে ইংল্যান্ড ইউরোর ইতিহাসে তৃতীয় দল হিসেবে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করল। এর আগে কেবল জার্মানি (৮ বার) এবং নরওয়ে (২ বার) এই কীর্তি গড়েছিল।
বিশ্বকাপজয়ী স্পেনের সামনে ছিল প্রথম ইউরো শিরোপা জয়ের সুবর্ণ সুযোগ, কিন্তু টাইব্রেকারে হোঁচট খেয়ে সোনার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড নারী ফুটবলের এক নতুন অধ্যায় রচনা করল। সংগ্রামের মাঝেও আত্মবিশ্বাস আর ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে।