জাদেজা-সুন্দরের দুর্দান্ত জুটিতে ড্র ভারতের, সিরিজে সমতা ফেরানোর সুযোগ

ইংল্যান্ডের মাটিতে যখন ভারতের পক্ষে হার প্রায় নিশ্চিত, তখন রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ব্যাট হয়ে উঠল এক অদম্য প্রতিরোধের প্রতীক। চতুর্থ টেস্টের পঞ্চম দিনে এই দুই বাঁহাতির ২০৩ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিই রক্ষা করল ভারতকে সম্ভাব্য পরাজয়ের মুখ থেকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ড্র হলেও, ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাস ফিরল, এবং শেষ টেস্টকে সামনে রেখে সিরিজে সমতা ফেরানোর সুযোগ উজ্জ্বল হলো।
ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ভারতীয় ইনিংসের শুরুটা ছিল দুর্যোগপূর্ণ। শূন্য রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। এরপর কেএল রাহুলের ৯০ রানের কার্যকর ইনিংস কিছুটা সামাল দিলেও, মূল দায়িত্ব নেন অধিনায়ক শুভমন গিল। ১৯৯০ সালের পর ম্যানচেস্টারে সেঞ্চুরি করা প্রথম ভারতীয় ব্যাটার হয়ে ইতিহাস গড়েন গিল। তিনি ১০৩ রান করে ফিরে গেলে ভারত আবারও ব্যাকফুটে চলে যায়।
এরপর ক্রিজে নামেন রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর। যখন সবার চোখে ভেসে উঠছে এক অনিবার্য পরাজয়ের ছায়া, তখন এই দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় ধীরে ধীরে ম্যাচ ঘুরে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট না হারানো ভারত দেখিয়ে দেয়-তারা হার মানতে আসেনি।
চা-বিরতির সময় ভারতের লিড ছিল মাত্র ১১ রান, কিন্তু তখনই বোঝা যাচ্ছিল ম্যাচের রং বদলে যাচ্ছে।
শেষ সেশনে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস করমর্দনের মাধ্যমে ড্র মেনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তখনই তো সেঞ্চুরির একেবারে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জাদেজা ও সুন্দর! ভারতের পক্ষ থেকে তখনই কোনও সম্মতি আসেনি। এরপর হ্যারি ব্রুককে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে জাদেজা পূর্ণ করেন নিজের পঞ্চম টেস্ট শতক। দু’ওভার পর ওয়াশিংটন সুন্দরও নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন।
জাদেজা অপরাজিত থাকেন ১৮৫ বলে ১০৭ রানে, আর সুন্দর খেলেন ২০৬ বলে ১০১ রানের সাহসী ইনিংস।
এদিকে ইংল্যান্ডের পক্ষে অধিনায়ক বেন স্টোকস এই ম্যাচে ব্যাটে ও বলে ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি দুই ইনিংসে মিলিয়ে নেন ৬ উইকেট এবং ব্যাট হাতে করেন ১৪১ রান। তার এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সই তাকে এনে দেয় ম্যাচসেরার স্বীকৃতি।
এই ড্রয়ের ফলে সিরিজের ফলাফল এখনো অনিশ্চিত। ৫ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড এখন ২-১ এ এগিয়ে আছে। শেষ টেস্টটি যদি ভারত জেতে, তবে সিরিজ হবে ২-২ এ ড্র। কিন্তু যদি ড্র বা ইংল্যান্ড জেতে, তবে সিরিজ তাদেরই পক্ষে যাবে।