সাগরে মাছের টান, আনোয়ারার জেলেরা দিশেহারা

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলে কয়েক দশক ধরে মাছ শিকার করেও সচ্ছলতা আসেনি জেলেদের জীবনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাগরে মাছের, বিশেষ করে ইলিশের, পরিমাণ কমে যাওয়ায় অনেকে লোকসানে পড়ে দিশেহারা। প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মেনে চললেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ তাদের।
জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ শিকারে ২০-৪০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও গত তিন-চার বছর ধরে তেমন মাছ পাচ্ছেন না। এতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকেই, এমনকি আত্মীয়-স্বজনও দূরে সরে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সরকারি মানবিক সহায়তার চালও যথাযথভাবে পৌঁছায় না বলে অভিযোগ।
৬৫ বছর বয়সী জেলে আবদুর রহমান বলেন, “এ বছর কোনো মাছই পাইনি। অনেক টাকা লোকসান দিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।” একই গ্রামের নুরুচ্ছফা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে বরাদ্দকৃত চাল ভোটের রাজনীতিতে ভাগ হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিয়ন্ত্রিত মাছ আহরণ ও বড় আকারের ইলিশ শিকার ইলিশের প্রজননে বড় ক্ষতি করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল আলম শাহীন বলেন, “একটি ইলিশকে অন্তত একবার ডিম দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের দেশে তা কার্যকর হচ্ছে না।”
সরকারি তথ্যমতে, ২০২৫ সালে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞায় চট্টগ্রামের ২৭ হাজার ২৩ জন নিবন্ধিত জেলের জন্য প্রায় ১ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে উপকূলে অনেকেই দুই কিস্তিতে ২৫ কেজির কম চাল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, নিবন্ধনের বাইরে থাকা জেলে পরিবারগুলোকেও চাল ভাগ করে দেওয়ায় জনপ্রতি বরাদ্দ কমে যায়, তবে কোনো অনিয়ম হয়নি। ভবিষ্যতে সব জেলেকে নিবন্ধনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।