চালক ছাড়াই চলবে বাইক! হোন্ডার চমকপ্রদ উদ্ভাবন

চিন্তা করুন, এমন এক মোটরসাইকেল যা চালাতে কাউকে স্টিয়ারিং ধরতে হয় না—চালক ছাড়াই আপনাআপনি ভারসাম্য রেখে চলে যাচ্ছে রাস্তায়! এমনই এক চমকপ্রদ আবিস্কার সামনে এনেছে জাপানের বিখ্যাত অটোমেকার হোন্ডা।
তাদের নতুন উদ্ভাবন, এক চালকবিহীন মোটরসাইকেল, যা দেখতে একদম ‘পোকেমন’-এর বিখ্যাত চরিত্র কোরাইডন-এর মতো। শুধু চেহারাতেই নয়, কাজেও যেন ভবিষ্যতের বাহন! গত ২৬ সেপ্টেম্বর, জাপানের তোচিগি প্রিফেকচারের মোতেগিতে অনুষ্ঠিত একটি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে ‘কোরাইডন বাইক’-এর লাইভ ডেমো দেখায় হোন্ডা। সেখানে কোম্পানির কর্মীরা প্রোটোটাইপ বাইকের উপর উঠে দেখান, কীভাবে এটি ধীরে ধীরে চলতে পারে একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনও চালক ছাড়াই!
এর বিশেষ দিক হলো, এই বাইকটি দুই চাকার হলেও আলাদা করে ভারসাম্য রাখতে বাড়তি কোনও চাকা ব্যবহার করা হয়নি। এটি নিজেই নিজের ভারসাম্য বুঝে নিতে পারে এবং চলার পথে দিকও পরিবর্তন করতে পারে। হোন্ডা জানিয়েছে, এই মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত হয়েছে তাদের বিখ্যাত হিউম্যানয়েড রোবট ‘আসিমো’-তে ব্যবহৃত বিশেষ প্রযুক্তি। বাইকের চাকার গঠন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে চলার সময় তা নমনীয়ভাবে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে—যেভাবে রোবট আসিমোর পা কাজ করে।
প্রযুক্তির এই অগ্রগতি কেবল কল্পবিজ্ঞান নয়, এখন রূপ নিয়েছে বাস্তবে। প্রদর্শনীতে দর্শকরা নিজেরািই বাইকটি চালিয়ে দেখেই বুঝতে পেরেছেন এটি যেন আগমীর ভবিষ্যতের নির্ভরযোগ্য বাহন হতে যাচ্ছে। হোন্ডা জানিয়েছে, তারা আগামী ‘জাপান মোবিলিটি শো ২০২৫’-এ আরও একটি অনুরূপ বাইক উন্মোচন করবে, যার নাম ‘মিরাইডন’। এটিও ‘পোকেমন’ চরিত্র অবলম্বনে তৈরি এবং এটি তৈরি করছে টয়োটা।
এদিকে হোন্ডার এই চমকপ্রদ আবিস্কার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হোন্ডার এই চালকবিহীন বাইক ভবিষ্যতের ব্যক্তিগত পরিবহনের চেহারা পাল্টে দিতে পারে। পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও ডিজাইন-ভিত্তিক এমন বাহন শহুরে জীবনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। জাপানে হোন্ডার এই ‘কোরাইডন বাইক’ এখন শুধু প্রযুক্তিপ্রেমীদের নয়, সাধারণ মানুষের মাঝেও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এটি যেমন নতুন প্রযুক্তির ঝলক দেখায়, তেমনি জানিয়ে দেয়—ভবিষ্যৎ আর দূরে নয়, সে তো এখন আমাদের দরজার কড়া নাড়ছে!
তথ্যসূত্র: নিক্কেই এশিয়া