বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত দেড় হাজার কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ডিসেম্বরে

বর্ষায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দেড় হাজার কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। খারাপ রাস্তায় মানুষের ভোগান্তির কারণে এসময় দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ঢাকায় মহাসড়কের সার্বিক পরিস্থিতি ও অবস্থান বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
সারা দেশে এই মুহূর্তে কী পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত- জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান জানান, তার আওতাধীন দেড় হাজার কিলোমিটার রাস্তা খারাপ।
এরপর সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, দেড় হাজার কিলোমিটারের মধ্যে আমরা সড়ক মেরামতের ক্ষেত্রে প্রায়োটাইজ করব। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমরা আরেকটি মিটিং করব। সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা এসব (সড়ক সংস্থার) কাজ কমপ্লিট করব।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বর্ষা শেষ হলে রাস্তা সংস্কার শুরু হবে। এ জন্য আগে থেকেই বৈঠক শুরু হয়েছে। যেসব রাস্তা পানি কিংবা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেগুলো সংস্কারের সময় কংক্রিট দিয়ে করা হবে। প্রথমে অগ্রাধিকার পাবে জাতীয় মহাসড়ক। এরপর আঞ্চলিক মহাসড়ক।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, এলজিইডির অধীনে মোট ৪ লাখ ১১ হাজার কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে এক লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার পাকা। প্রতিবছর আমরা সড়ক মেরামতের জন্য তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা পাই, এবারও সেটা পেয়েছি। তবে কি পরিমাণ সড়ক বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ঢাকার রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিং করা হচ্ছে। নতুন গাড়ি নামাতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
গাড়ি আমদানির নীতিতে কিছু সংস্কার আনা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, গাড়ি আমদানি এক দেশ–নির্ভর হওয়ায় গুণগত মান বাড়ছে না। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আমদানির নীতি পরিবর্তন করা দরকার।
সড়ক নির্মাণের খরচ কমানোর উপায় বের করতে একটি ‘রিভিউ কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) শেখ মইনউদ্দিনকে কমিটির প্রধান করা হচ্ছে। কমিটিতে সড়ক পরিবহন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি গঠন করা হবে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট শিডিউল ও সড়কের প্রাক্কলিত ব্যয় রিভিউ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ খরচ ৩০ শতাংশ বেশি। কমিটি বিস্তারিত অনুসন্ধান ও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করবে। গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে সড়ক নির্মাণে সচেষ্ট থাকবে সরকার।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে যেসব সড়কে পণ্যবাহী যান ও মানুষ চলাচল বেশি করে, সেগুলো সংস্কারে অগ্রাধিকার পাবে। এমনভাবে সড়ক সংস্কার করতে হবে, যেন তা স্থায়ী হয়।