জেলার হিমাগারগুলোতে বিপুল পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে। তবে চাহিদা না থাকায় প্রতিদিনই হিমাগার থেকে আলু বের করে বাছাইয়ের পর ফের জমা রাখছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
বাজারে দাম কম থাকায় কুড়িগ্রামে উৎপাদিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা। মজুত থাকা সত্ত্বেও নেই ক্রেতা। এ অবস্থায় সরকারিভাবে টিসিবির পণ্যে আলু সংযুক্ত এবং বিদেশে রফতানির মাধ্যমে বাজারদর সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত বছর লাভজনক দামে আলু বিক্রি হওয়ায় এবার কুড়িগ্রামে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন করেন কৃষকরা। এর মধ্যে জেলার চারটি হিমাগারে মজুত রাখা হয়েছে ৫২ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু বাজারে প্রতিকেজি আলুর দাম ১০ থেকে ১১ টাকায় নেমে আসায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। উৎপাদন ও হিমাগারে সংরক্ষণের ব্যয় মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর খরচ দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা।
রাজারহাটের ছিনাই এলাকার চাষি সবুজ বলেন, ‘প্রতিকেজি আলুতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ টাকা। অথচ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। এই দামে পুঁজি তো উঠছেই না, বরং লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এ হক হিমাগারের ম্যানেজার মাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাজারে দাম কম থাকায় আমরা বারবার নোটিশ দিয়েও আলু উত্তোলন করাতে পারছি না। অবস্থা এভাবে চলতে থাকলে কৃষক ও ব্যবসায়ী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
এই অবস্থায় কৃষকরা দাবি করছেন, সরকার যেন টিসিবির মাধ্যমে আলু কিনে ভর্তুকি মূল্যে বাজারে সরবরাহ করে এবং বিদেশে রফতানি বাড়ায়। না হলে লোকসানের কারণে ভবিষ্যতে অনেকেই আলু আবাদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন।
কৃষি বিপণন অধিদফতরের কুড়িগ্রাম জেলা কর্মকর্তা রিমা মনি শীল বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। আগামী মৌসুমে আলু উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে তাদের মতামতের ভিত্তিতে দাম বৃদ্ধির উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর কুড়িগ্রামে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছিল। চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার হেক্টরে এবং উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। চারটি হিমাগারে মজুদ থাকা ৫২ হাজার মেট্রিক টনের মধ্যে এখন পর্যন্ত উত্তোলন করা হয়েছে মাত্র ৪ হাজার মেট্রিক টন আলু।