রোববার , ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sunday , 07 September 2025
১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইন্দোনেশিয়ায় তীব্র সরকারবিরোধী বিক্ষোভ: বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনতার উত্তাল প্রতিবাদ

ইন্দোনেশিয়ায় তীব্র সরকারবিরোধী বিক্ষোভ: বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনতার উত্তাল প্রতিবাদ
ইন্দোনেশিয়ায় তীব্র সরকারবিরোধী বিক্ষোভ

জনপ্রতিনিধিদের ভাতা বৃদ্ধিতে ক্ষোভ

ইন্দোনেশিয়া সরকার ৫৮০ সংসদ সদস্যের জন্য মাসিক ৫০ মিলিয়ন রুপিয়া (প্রায় ৩ হাজার মার্কিন ডলার) আবাসন ভাতা অনুমোদন করে। এই পরিমাণ অর্থ দেশটির ন্যূনতম মজুরির ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি করে। চলমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় এই ধরনের ঘোষণা জনগণের চোখে চরম বৈষম্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।

আফফানের মৃত্যুতে আন্দোলনের বিস্ফোরণ

আগস্টের শেষ দিকে রাজধানী জাকার্তায় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সাঁজোয়া গাড়ির চাপায় নিহত হন ২১ বছর বয়সী ফুড ডেলিভারি কর্মী আফফান কুর্নিয়াওয়ান। তিনি কোনো বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিলেন না; বরং কর্মরত অবস্থায় ছিলেন। তার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনসংগ্রামের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে, যা আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।

দেশজুড়ে আন্দোলন, পুলিশের কঠোর 대응

আফফানের মৃত্যুর পর রাজধানী জাকার্তা ছাড়াও সুমাত্রা, সুলাওয়েসি, কালিমান্তান এবং বালির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলন দমন করতে গেলে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। একাধিক স্থানে সরকারি ভবন, এমপিদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে।

আন্দোলনকারীদের মূল অভিযোগ: বৈষম্যের শাসন

উত্তর সুমাত্রার এক ফুড ডেলিভারি কর্মী ইমরান বলেন,

“আমাদের আন্দোলনের মূল কারণ বৈষম্য—অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত, স্বাস্থ্যগত ও জনসেবায়। জনপ্রতিনিধিদের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণায় এই ক্ষোভ ফেটে পড়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন,

“আমরা চাই স্বচ্ছ আমলাতন্ত্র, ন্যায্য সুযোগ এবং বৈষম্যহীন সমাজ। আমাদের নিয়ে শাসকদের কোনো ভাবনা নেই।”

সরকারের পিছু হটা, আন্দোলন কি থামবে?

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, জনপ্রতিনিধিদের আবাসন ভাতা বাতিল, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, শুধুমাত্র এই সিদ্ধান্তগুলো বিক্ষোভ থামাতে যথেষ্ট নাও হতে পারে

এই আন্দোলন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইন্দোনেশিয়ার জনগণ এখন শুধু একটি সিদ্ধান্ত নয়, একটি ন্যায্য ও সমান সুযোগের সমাজব্যবস্থা চায়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়