গোলাপি পোশাক আর ঝাড়ু হাতে জাকার্তার রাজপথে নারীরা

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ঝাড়ু হাতে গোলাপি পোশাক পরে রাস্তায় নেমেছেন শত শত নারী। বুধবারের (৩ সেপ্টেম্বর) এই বিক্ষোভে তাঁরা সংসদ সদস্যদের ভোগবিলাস, সরকারি অপচয় ও পুলিশের দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
ঝাড়ু হাতে নিয়ে নারী বিক্ষোভকারীরা নানা স্লোগান লিখিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এক প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘পুলিশের সংস্কার চাই’। আরেকটিতে ব্যঙ্গ করে লেখা ছিল—‘তোমাদের মিষ্টি প্রতিশ্রুতিতে ডায়াবেটিস হয়।’
আয়োজক সংগঠন ‘অ্যালায়েন্স অব ইন্দোনেশিয়ান উইমেন’ জানিয়েছে—দুর্নীতি ও নিরাপত্তা বাহিনীর দমননীতিকে প্রতীকীভাবে ‘ঝেঁটিয়ে সরানোর’ প্রতীক হলো ঝাড়ু।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় একজন ডেলিভারি চালক নিহত হলে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায় এবং আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। বিভিন্ন প্রাদেশিক সংসদে অগ্নিসংযোগ ছাড়াও সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম নারীদের প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ৩০ বছর বয়সী রিজকি আনন্দা বলেন, ‘আমরা দেখাতে চাই প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হতে পারে। সরকার যদি একে রাষ্ট্রদ্রোহ বলে, তবে তা অমূলক দাবি হবে।’ তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা ও অযথা সরকারি ব্যয়ের বিরুদ্ধেও অবস্থান জানান।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো গত রোববার দাবি করেছেন, কিছু সহিংসতা নাকি ‘সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রদ্রোহের লক্ষণ’ বহন করছে। তিনি সেনা ও পুলিশকে কঠোর থাকার নির্দেশ দেন। প্রথমে সফর বাতিল করলেও গতকাল বুধবার চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিতে তিনি দেশ ছাড়েন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, ইন্দোনেশিয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়ায় তিনি সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, তারা পুলিশের আচরণ তদন্ত করছে। কমিশনার আনিস হিদায়াহ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের সব অভিযোগ—বিশেষ করে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।