ফ্রান্সে ৯ মসজিদের সামনে শূকরের মাথা, ক্ষুব্ধ মুসলিমরা

প্যারিসের কেন্দ্রস্থলের জাভেল মসজিদের দরজার সামনে রক্তমাখা শূকরের মাথা ফেলে রাখা হয় কিছুদিন আগে। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখ ভোরে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান। শূকরের মাথার ওপরে নীল কালি দিয়ে লেখা ছিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের নাম—‘মাখোঁ।’
আইফেল টাওয়ার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মসজিদে লেবানন, আলজেরিয়া, ইরানসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা নামাজ আদায় করেন। বহু বছর ধরে এলাকাটিতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করছিলেন তাঁরা।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মসজিদের রেক্টর নাজাত বেনালি আল–জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের জীবনে এরকম কিছু আগে কখনো ঘটেনি।’
বেনালি জানান, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত মসজিদে পৌঁছান। তিনি বলেন, ‘তাঁরা একেবারেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। যখন এরকম কিছু ঘটে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবাই আশপাশে খেয়াল করতে থাকে।’
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানায়, শুধু জাভেল মসজিদ নয়, আরও আটটি মসজিদের সামনে একইভাবে শূকরের মাথা ফেলে রাখা হয়েছে।
এই ঘটনা ঘটল এমন এক সময়ে, যখন ফ্রান্সে মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসেই ১৪৫টি ইসলামবিরোধী ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাণ্ড ও হুমকির মতো অপরাধও রয়েছে। মে মাসে মালির নাগরিক আবুবাকার সিসেকে খুনের ঘটনাও এরই অংশ।
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ফ্রান্সে প্রতি তিনজন মুসলিমের মধ্যে দুইজন গত পাঁচ বছরে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন। মানবাধিকারকর্মী সাফিয়া আইত ওয়ারাবি বলেন, “এটি আমাদের ব্যক্তিগতভাবেও আঘাত করে। হিজাব পরা তরুণীরা প্রতিদিন ভয় নিয়ে স্কুলে যায়। মুসলিম পরিবারগুলোতে আতঙ্কের আবহ বিরাজ করছে।”