২৫টি বোয়িং কিনছে বাংলাদেশ, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান চুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তির অংশ হিসেবে বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি নতুন উড়োজাহাজ কিনবে বাংলাদেশ। জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জন্যই এই রেকর্ডসংখ্যক উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে চুক্তির বিস্তারিত বিষয়ে এখনো কিছু জানে না সংস্থাটি নিজেই।
সরকার বলছে, পাল্টা শুল্ক সুবিধার অংশ হিসেবেই এই ক্রয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বিমানের বহর বাড়াতে হবে, এই পরিকল্পনা সরকারের আগেই ছিল। পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে নতুন করে অর্ডারগুলো দেওয়া হয়েছে। আগে ছিল ১৪টি, এখন ২৫টি।
রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার জন্য এটি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান ক্রয় পরিকল্পনা। বোয়িং থেকে এর আগে এতসংখ্যক বিমান কখনোই কেনেনি বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, এই বহরের কিছু উড়োজাহাজ আগামী এক–দুই বছরের মধ্যেই ডেলিভারি দেওয়া হতে পারে।
চমকপ্রদ তথ্য হলো- এই পুরো অর্ডার বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এমনকি বোয়িং বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ হয়নি বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
এই বিশাল বহর কীভাবে পরিচালনা করবে বিমান? প্রশ্নটা উঠেছে বড় করে। কারণ, বিমান এখনো পুরোপুরি লাভজনক ধারায় ফিরতে পারেনি। অনেক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পূর্ণ হয় না লোকসানি রুট বন্ধ করতে পারছে না, অতিরিক্ত কর্মী কাঠামো ও অভ্যন্তরীণ অদক্ষতা জর্জরিত।
বেসরকারি এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৫টি বোয়িং কেনা নিঃসন্দেহে একটি সাহসী উদ্যোগ। কিন্তু এই সাহস যেন এমন এক প্রতিষ্ঠানের কাঁধে চাপিয়ে না দেওয়া হয়, যে নিজের ভারই সামলাতে পারছে না।
তাদের মতে, বহর বাড়ানোর আগে জরুরি ছিল বিমানের- অভ্যন্তরীণ কাঠামো সংস্কার, দক্ষ জনবল গঠন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, লোকসানী রুট পর্যালোচনা, গ্রাউন্ডেড বিমানের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। তা না করে এখন যেসব উড়োজাহাজ আসবে, সেগুলো ভবিষ্যতে হ্যাঙ্গারে পড়ে থাকা ধুলিমাখা বোঝায় পরিণত হতে পারে।