গাজায় একদিনে আরও ৮৩ জন নিহত

ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা গোলাবর্ষণে রক্তাক্ত গাজা। বুধবার (৩০ জুলাই) দিনভর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৩ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ৫৫৪ জন। এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বুধবারের হামলা শেষে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৩২ জনে, আর আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৩ জন ফিলিস্তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। সীমিত সরঞ্জাম ও উদ্ধারকর্মীর অভাবে তাদের বের করে আনা যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষও হামলার শিকার হচ্ছেন। শুক্রবার গাজার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ নিতে এসে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৫৩ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৪০০ জন।
হামলার সূত্রপাত ঘটে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন গাজা নিয়ন্ত্রিত হামাস ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
প্রায় ১৫ মাসের টানা অভিযান শেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও শুরু হয় দ্বিতীয় দফার অভিযান, যাতে গত চার মাসেই প্রাণ হারিয়েছেন ৯ হাজার ১৬৩ জন, আর আহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৬০০ জনের বেশি।
হামাসের হাতে ধৃত ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত বলে মনে করছে ইসরায়েলি বাহিনী। আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) জানিয়েছে, সামরিক অভিযানের মাধ্যমেই তাদের উদ্ধার করা হবে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন বারবার এই হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং সব জিম্মিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান থামবে না।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের হয়েছে, যা এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।