আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে এসেছেন মাশরাফি!

বাংলাদেশে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ মাশরাফি বিন মুর্তজা আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে এসেছেন বলে জানা যাচ্ছে। যে বিষয়টি জনসম্মুখে এনেছেন স্বয়ং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
২৪ এর ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে কিংবা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ওই সরকারের আমলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাশরাফিও ছিলেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য। তবে সরকারের পতনের পর থেকে তিনি থেকেছেন একেবারেই নীরব।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফির প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমার জানামতে, উনি যে রাজনৈতিক অবস্থানে ছিলেন, তা থেকেও সরে এসেছেন। সম্ভবত ফেসবুকেও বিষয়টি স্পষ্ট করেছিলেন।” তবে বাস্তবে মাশরাফি ফেসবুকে নয়, গত বছরের আগস্টে এক সাক্ষাৎকারে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন। সেখানে তিনি বলেন, “যখন রাজনীতিতে ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডে থাকার চেষ্টা করিনি। এখন রাজনীতিতে নেই, এখন যদি বোর্ডে থাকার চেষ্টা করি বা থাকতে চাই, তাহলে কেমন হয়ে যায় না!”
এই বক্তব্যে তিনি "ছিলাম" শব্দটি ব্যবহার করে স্পষ্টভাবেই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন। এদিকে গত এক বছরে মাশরাফির করা ১৪টি ফেসবুক পোস্টের একটিতেও আওয়ামী লীগের নাম নেই। যেখানে অন্যদিকে, সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে বহুবার আলোচনায় এসেছেন এবং বর্তমানে একাধিক মামলায় জড়িত। আসিফ মাহমুদ বলেন, “মাশরাফির বিষয়ে আমাদের হাতে এমন কোনো তথ্য নেই যা আইনগতভাবে আলোচনার বিষয় হতে পারে। যদি রাষ্ট্রীয় আইনে কিছু করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মাশরাফি এখন খেলাধুলার ক্ষেত্রেও একটিভ না, যেটা সাকিব এখনো ছিলেন। ফলে আলোচনায়ও আসেননি।” সাক্ষাৎকারে আসিফ মাহমুদ মূলত সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই মাশরাফির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করেন। সাকিবের বিরুদ্ধে শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা, এবং পারিবারিক হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিভিন্ন ইস্যু আলোচনায় এসেছে। তবে মাশরাফি এসব ইস্যু থেকে এখনো অনেকটাই দূরে।
সরকার পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন বিশৃঙ্খলা ও পালাবদলের হাওয়া, তখন মাশরাফি বিন মুর্তজার রাজনীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত এবং নীরব ভূমিকা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও তিনি প্রকাশ্যে কিছু বলেননি, তার কথাবার্তা, সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়তা এবং সাম্প্রতিক অবস্থান—সব কিছুই বলছে, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।