তাকামোল প্রকল্পের আওতায় ১ লাখের বেশি কর্মীকে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা

দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বাস্তবায়িত তাকামোল প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় আগামী বছরে লক্ষাধিক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইতোমধ্যে ৫০ হাজার প্রশিক্ষণার্থী সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে ৪০ হাজার জন আন্তর্জাতিক মানের মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সনদ অর্জন করেছেন। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সাফল্য বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন ও মানবসম্পদ রফতানিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো বিদেশগামী কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে তোলা। এর আওতায় টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষা, পেশাগত নিরাপত্তা, ভাষা শিক্ষা, আচরণবিধি এবং প্রি-ডিপারচার ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হচ্ছে।
পরবর্তী ধাপে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে আরও বড় পরিসরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সরাসরি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে না পারা আগ্রহীদের জন্য ই-লার্নিং সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে অনলাইন প্রশিক্ষণের সুবিধা চালু করা হচ্ছে। এতে করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণরাও প্রশিক্ষণের আওতায় আসতে পারবেন।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত রিক্রুটিং এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ফর ইউরোপ অ্যান্ড ডেভেলপড কান্ট্রিজের (র্যাবেড) সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের সংশ্লিষ্ট কাজে প্রশিক্ষণ খুব জরুরী এবং এটা (তাকামোল সার্টিফিকেট) শুরু করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। তবে নামে মাত্র কিছু প্রশিক্ষণ হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শোনা যায় টাকার বিনিময়েই প্রশিক্ষণ সনদ পত্র দেয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র বিএমইটি এর হাতেগোনা কিছু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে সীমিত না রেখে সরকারি বেসরকারি সকল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে এটা ছড়িয়ে দিতে হবে। আবার খেয়াল রাখতে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য যেন অহেতুক সময় ক্ষেপন না হয়। সৌদি আরবসহ কর্মী গ্রহণকারী সকল দেশই দ্রুত সময়ের মধ্যে কর্মী প্রেরণ করতে না পারলে তারা বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে অন্য দেশ থেকে কর্মী নিয়ে যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় মনে করে, তাকামোল প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের ফলে বিদেশে কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।